মঙ্গলবার, ২৭ জুন, ২০১৭

সাহেব বুলবুলি | দুধরাজ-Asian Paradise Flycather


দুধরাজ নামটা অনেকের কাছে পরিচিত আবার অনেকের কাছে অপরিচিত ।দুধরাজ বা সাহেব বুলবুলি একটি অপরুপ সুন্দর পাখির নাম । অপরুপ সুন্দর এই পাখিটি দেখলে আপনার মনে হবে কোনো দিন দেখেন নি এই পাখিটি । চোখে পড়লে নজর ফেরানো যায় না । আর যখন সে ওড়ে সে দৃশ্য যে কত অপরুপ বলে বোঝানো যাবে না । মনে হবে হয়ত আপনি কোন ছবি দেখছেন । পাখিটি দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি দেখা পাওয়াও তেমনি দুর্লভ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অঞ্চল্ভেদে পাখিটিকে দুধরাজ, সাহেব বুলবুলি , শাহ বুলবুলি, ও নন্দন পাখি নামেও পরিচিত। দেখতে বুল্বুলির মত মনে হলেও বুল্বুলির সমগত্রীয় নয় এ পাখিটি। 


সাহেব বুল্বুলিকে ইংরেজিতে Asian Paradise Flycather নামে ডাকা হয় । তবে এর বৈজ্ঞানিক নাম Terpsiphone paradise ( টেপসিফোন প্যারাডিসি)।
পাখি বলতেই সুন্দর একটি আকৃতি আমাদের সামনে আসে। সুদীর্ঘ লেজ দুধরাজ পাখিটির শারীরিক সৌন্দর্য  বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে । লেজের জন্যই পাখিটি মুলত বেশি পরিচিত পেয়েছে । দুধরাজের লেজে দুটি পালক থাকে যা তার সৌন্দর্যকে নিয়ে যায় অন্য এক সীমানায়। লম্বা লেজের জন্য পাখিটিকে তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হয় না। দুধরাজের লম্বা লেজ মূলত পাখি প্রেমিদের বেশি আকৃষ্ঠ করে।

ঠোঁট থেকে লেজ পর্যন্ত এর দৈঘ্য ১৯ থেকে ২২ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। লেজের প্রান্ত থেকে লম্বা পালক দুটির মাপ ২২ থেকে ২৬ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে ওড়ার সময় সুবিধা মত নাড়াতে পারে তার পালক এবং লেজকে।
দুধরাজের কয়েকটি প্রজাতি লক্ষ করা যায়। সাধারনত দুটি প্রজাতি বাংলাদেশে বেশি দেখা যায় । এক প্রজাতির পাখির রং সাদা কালো , বিশেষত এই রঙের পাখির মাথা কালো এবং পুরো শরীর সাদা হয়। মূলত দুধের মত সাদা লেজ ও শরীর হওয়ার জন্যই একে দুধরাজ বলা হয়। অপর প্রজাতির রং লালচে বাদামি হয়। এদের মাথার রং চুকচুকে কালো ও লেজ এবং শরীরের রং লালচে বাদামি ।



তবে উভয় প্রজাতির রং আলাদা হলেও দেখতে একই রকমের হয়। নারী পাখিগুলো দেখতে অনেকটা আলাদা। দেখে মনে হবে অন্য ধরনের পাখি এদের পুরুষ পাখির মত লম্বা লেজ নাই। সাধারন বুল্বুলি পাখির মতই দেখতে হয় এরা তবে রং পুরুষ পাখির মতই।
দুধরাজ পাখি সাধারনত চঞ্চল প্রকৃতির, কোথাও স্থির ভাবে বেশি সময় থাকে না । উড়তে খুব ভালবাসে বলে পাখিটি দেখতে হলে খুব ধৈয্যের প্রয়োজন হয়। এই পাখি দম্পত্তি এক সাথে থাকতে খুব ভালবাসে। খুব সুন্দর ও যত্ন করে গাছের ডালে বা বাঁশঝাড়ে বাসা বানায় এরা। ঘাস,লতাপাতা, মাকড়সার জাল দিয়ে বানানো বাসা দূর থেকে খুব চমৎকার দেখায়।
 

এরা বাঁশঝাড়ে থাকতে বেশি পছন্দ করে তবে অনেক সময় আম কাঁঠালের বাগানেও দেখা মেলে।
দুধরাজের প্রিয় খাবার বিভিন্ন ধরনের পোকা মাকড়। উড়ন্ত পোকা ধরতে এরা খুব পারদর্শী। তবে এদের কন্ঠ কিছুটা ভারি ও কর্কশ ধরনের। প্রজনন মৌসুমে মিষ্ঠি সুরে ডাকাডাকি করে। তাদের প্রজনন মৌসুম শুরু হয় বৈশাখ মাসে। চার থেকে ছয়টি ডিম দিয়ে থাকে। দুধরাজ ১০-১৪ বছর বেচেঁ থাকে।
এরা মূলত সুন্দর বনের পাখি কিন্তু লোকালয়েও এদের যথেষ্ঠ দেখা যায়। সারা দেশে পাওয়া গেলেও পঞ্চগড় ও উত্তরাঞ্চলে এদের বেশি দেখা যায়। তবে আফসোসের বিষয় দিন দিন কমে যাচ্ছে সুন্দর এই পাখিটি প্রকৃতি থেকে। 


1 টি মন্তব্য:

পায়রা

ছোট থেকে আমার খুব শখ ছিল আমি পায়রা পালন করব । কিন্তু টাকা , জায়গার জন্য তেমন সুযোগ হচ্ছিল না । গ্রামে বাসা তাই আমাদের অনেক কিছু মেনে চ...