দোয়েল- Magpie-robin
দোয়েল পাখি
চিনেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। কয়েকটি কারণে দোয়েল আমাদের কাছে বেশি পরিচিত । এর
মধ্যে একটি দোয়েল বাংলাদেশের জাতীয় পাখি। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই দেখা
মেলে এই পাখিটির। এককথায় বলা যায় যে দোয়েল আমাদের প্রতিবেশি।
দোয়েল পাখি Passeriformes বর্গের অন্তর্গত Muscicapidae গোত্রের সদস্য। সাদা কালোয় সুসজ্জিত
বুলবুল প্রকৃতির খাটো লেজবিশিষ্ঠ এ পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Copsychus saularis । পুরুষ ও নারী পাখির ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য লক্ষ
করা যায়। পুরুষ দোয়েলের উপরিভাগ চকচকে নীলাভ-কালো বর্ণের হয়ে থাকে। দোয়েলের ডানা স্পষ্ঠ
সাদা লম্বা একটি দাগসহ কালচে বাদামি রঙের । লেজ কালো তবে লেজের শেষ প্রান্তঅংশ সাদা।
নারী দোয়েলের দেহের কালো অংশ গুলো বাদামি রঙের হয়ে থাকে। অনেক সময় ময়লা মাটির মত দেখায়।
গাছের ডালে বা বড় গাছের গর্তে, ঝোপঝাড়ে এরা বাসা বাঁধে। দোয়েল জোড়ায় জোড়ায় থাকতে ভালবাসে।
এদেরকে বন, ঝোপঝাড়, আম বাগান্, গ্রাম, লোকালয়ে দেখতে পাওয়া যায়।
এদেরকে অনেক সময় বিভিন্ন শাক-সব্জির মাচানে দেখা যায়। দোয়েল
মূলত তার মিষ্ঠি কন্ঠের জন্য বিশেষ ভাবে সুপরিচিত। বাড়ির আশপাসে, উঠানে, বা মাচায় এরা
মিষ্ঠি সুরে শিস দেয় এবং অপুরুপ ভঙ্গিতে লেজের ডগা নাচায়।দোয়েল যখন স্থির ভাবে বসে
থাকে তখন এর লেজ মোরগের লেজের মত দেখায়।
প্রজননের মৌসুমে পূরুষ দোয়েল খুব ভোরবেলা এবং পড়ন্ত দুপুরবেলা
সুরেলা গলায় অত্যন্ত জোরে শিস দেয়। চমৎকার বিষয় হল এরা অনায়েশে অন্য পাখির ডাক নকল
করতে পারে। এরা সাধারনত পোকা-মাকড়, কীটপতঙ্গ খেয়ে জীবন যাপন করে। দোয়েলের প্রজনন ঋতু
শুরু হয় এপ্রিল মাসে এবং শেষ হয় জুলাই মাসে। নারী দোয়েল ৪-৬টি ডিম দেয়। সাদারণত ডিমগুলো ফ্যাকাশে দেখায়। তবে দোয়েলের ডিমের
রং লালচে বাদামি আভা ও ছোপযুক্ত সবুজ নীলাভ সবুজ় হয়ে থাকে। নারী দোয়েল দিমে তা দেয়
পুরুষ দোয়ল সাহায্য করে। দোয়েল পাখি সাধারনত ১৫ বছর পর্যন্ত বাচেঁ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন